সুবোধের সাথে কতক্ষন...
Date:02-04-2019
এখন একটা অসাধারণ বই পড়ে শেষ করলাম।বইটা এক কথায় বলা যায় অসাধারণ।এর থেকে উচ্চতর ভাষা আমার মনে আসছে না।
বইয়ের নাম:কারাগারে সুবোধ।
লেখক:আলী আব্দুল্লাহ।
সম্পাদনাঃশিহাব আহমেদ তুহিন।
বইটাতে সবচেয়ে বেশি অসাধারণ লেগেছে সুবোধ তথা আব্দুল্লাহর রসকসে টইটুম্বুর কথাগুলো।খুব খুব খিল খিল করে হেসেছি সজলের আল্লাহু আকবর বলার পরের পরিস্থিতিতে।আর খুব কষ্ট লেগেছে সুবোধের প্রতি তার ফুফুর অনীহায়।আরো ভালো লেগে যায় রায়হানের সেই গম্ভীরতা ও থমথমে ভাব।এটা পড়ে তো আমার এক বান্ধবী বলে ফেলেছে,তারও ইচ্ছা করে সুবোধের মতো রায়হানকে ডিসমিস করে দেওয়ার কথা আমাকেও বলতে।স্বভাবগত মিল দেখ হয়ত বলেছে।(তবে আমি কিন্তু পুরোপুরি এইরকম না😒)।মনে পড়ে সেই লিপির মায়ের কথা।যিনি কিনা শুধু মানুষের সাথেই নয় সাবান ও কলের সাথেও বকবক করতে পারে😂।শরবত বিক্রেতা এমদাদ মিয়া মন্ত্রীর কথা কিভাবে ভুলে যায়?সজল সেই তেল ও জ্বালানি মন্ত্রীর পুত্রধন।সেও আব্দুল্লাহ হওয়ার পথে...
রস্তম সাহেবের হা হয়ে কথা গিলার ব্যাপারটা
ভারি অদ্ভুদ!!!
সুবোধের রাত দেড়টায় হবু মন্ত্রীর বাড়িতে সজলের সাথে দেখা করতে যাওয়া থেকে শুরু করে-ওসি সাহেবের অফিসে পরোটা,শিক কবাব সাথে পেঁয়াজ বেরেশতা দিয়ে খাসির মগজ খাওয়া অবশেষে সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় উঠার নেশা।সবই আমাকে নেশা আচ্ছন্ন(!) করে রেখেছে।বইটা প্রথমে পড়তে শুরু করি হাটঁতে হাটঁতে।একজন আমাতুল্লাহ থেকে ধার করে আনলাম পড়ার জন্য।কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে যেতে হবে,সেই কারণে কি আর করা অগত্য বইটা হাতে করেই বেরিয়ে পড়লাম।(বইটা তো রেখেও যাওয়া যায় না💔)।
খোলা আকাশের নিচে আমি,বই আর আমার আল্লাহ।আহ! কি অপার্থিব আনন্দই না হচ্ছিল তখন!
গাড়ি ছিল না বলে হেঁটে হেঁটে অনেকটা পথ আসতে হলো।ভরদুপুরে কে আর আমাদের জন্য এই জনমানব শুন্য রাস্তায় গাড়ি নিয়ে আসবে😞।তবে গাড়ি পাই নি এটার জন্য তো আর বিরক্ত হওয়ার কথা নয়।আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল।দুপুর দেড়টায় কলেজের উদ্দেশ্যে ইচ্ছা খুব না থাকলেও বের হতে হলো।দুপুরের এই কড়া রোদ শুধু আমি একলা উপভোগ করি নি।সাথে ছিল আমার হাস্যরসে ভরা রাগ না করা,গম্ভীরতা বিহীন বান্ধবী।কেনো যেন মেয়েটা অনেক ভালোই লাগে। হাসেও খুব সুন্দর করে।মোনালিসাও ফেল!!
যখন এই প্রচন্ড রোদে আমার বেহাল অবস্থা,তখনই সামনে আসে 'লেখকের কথার' প্রথম বাক্য..
"আজ এবেলা আকাশটা বেশ আপন মনে হচ্ছে আমার"
তখন ফিল করলাম কথাটা আমার মনের গহীন থেকে।রাস্তায় আমি আমার ফেন্ড ছাড়া আর কেউ ছিল না।তপ্ত রোদে কেই বা বের হবে! আকাশের দিকে তাকালাম।রোদ্রলা দিনেও আকাশকে ভারী সুন্দর লাগছে।এতক্ষন অবশ্য বইয়ের পাতায় মুখ গুজে ছিলাম, তাই অতটা খেয়াল করিনি।এই রোদ্রের তাপে সিক্ত আমার মন থেকেও বলতে ইচ্ছা করছে..
"আজ এ বেলা আকাশটা বেশ আপন মনে হচ্ছে আমার"
সব মিলিয়ে অনন্য সাধারণ একটা বই।তবে ভালো লাগে সুবোধের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।যেখানেই যায় পৌঁছে দেয়,যা পৌঁছানো দায়িত্ব আমাদের সবার কাদেঁ।ভালো লাগে তার অস্থিরতার সময় কুরআন তিলাওয়াত। আরো ভালো লাগে তার চিকনগুনিয়া নামের বিশ্লেষণ।
বেশ ভালোই ব্যবচ্ছেদ করলো চিকনগুনিয়াকে😂।
হাত কন্টোল করতে পারছি না।অনেক ভালো লাগা অনেক অনুভুতি আছে বইটাকে ঘিরে।পুরোই নেশা লাগানো টাইপ...
তাই আপাতত এখানেই দুঃখের সাথে(শেষ করতে পারলাম না তাই)বই পড়ার অনুভুতি লেখা শেষ করলাম।
"হুজুরদের মিসওয়াক করতে দেখতাম কিন্তু এত ডিটেইলে ব্যাপারটা জানতাম না"
"ইসলামের ছোট ছোট ব্যাপারগুলো থেকে শুরু করে বড় বড় গুরুগম্ভীর বিষয়গুলো আপনি যত ডিটেইলে জানবেন,ইসলামের প্রতি ইন্টেরেস্ট আপনার ততই বাড়তে থাকবে।যদি না আপনার হৃদয়ে মোহর মারা থাকে।মোহর মারা লোকজন শেষ গন্তব্য প্রজ্বলিত অগ্নি,আই মিন জাহান্নাম"
"হুজুরদের মিসওয়াক করতে দেখতাম কিন্তু এত ডিটেইলে ব্যাপারটা জানতাম না"
"ইসলামের ছোট ছোট ব্যাপারগুলো থেকে শুরু করে বড় বড় গুরুগম্ভীর বিষয়গুলো আপনি যত ডিটেইলে জানবেন,ইসলামের প্রতি ইন্টেরেস্ট আপনার ততই বাড়তে থাকবে।যদি না আপনার হৃদয়ে মোহর মারা থাকে।মোহর মারা লোকজন শেষ গন্তব্য প্রজ্বলিত অগ্নি,আই মিন জাহান্নাম"
এই তো আর কি?
Comments
Post a Comment